নীল চাষ অত্যাধিক লাভজনক হওয়ায় ১৭৯৬ সালে মেহেরপুর (তৎকালীন নদীয়া) অঞ্চলে নীল চাষ শুরু হয়। ১৮১৮ থেকে ১৮২০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে মেহেরপুরর বেশ কয়েকটি স্থানে নীলকুঠি স্থাপিত হয়। তন্মধ্যে আমঝুপি, গাংনীর ভাটপাড়া, বামন্দি নীলকুঠি অন্যতম। ক্যারল ব্লুম নামে এক ইংরেজ ব্যক্তি তৎকালীন নদীয়া জেলা বর্তমানে মেহেরপুরের আমঝুপির কাজলা নদীর তীরে ৩ শ’ বিঘা জমির উপর নীলকুঠি স্থাপন করেন।
নীল তৈরি করতে প্রয়োজন হতো পানির। সেজন্য বাংলাদেশের নীলকুঠিগুলো গড়ে উঠেছিল কোনো না কোনো
নদীর ধারে। আমঝুপি নীলকুঠিটিও তাই তৈরি হয়েছিল কাজলা নদীর তীরে।
নদীর ধারে। আমঝুপি নীলকুঠিটিও তাই তৈরি হয়েছিল কাজলা নদীর তীরে।
কথিত আছে রবাট ক্লাইভ প্রায়ই সময় কাটানোর জন্য আমঝুপি নীলকুঠিতে আসতেন। আমোদ-ফুর্তি হত, নাচের আসর বসানো হত। নীলকুঠীতে তার ব্যবহার্য্য সামগ্রীও ছিল, যা সংরক্ষনের জন্য জাতীয় জাদুঘর কতৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জনশ্রুতি আছে মীরজাফরের সাথে ক্লাইভের পলাশীর ষড়যন্ত্রও নাকি এখানে হয়েছে। কিন্তু অনেক ইতিহাসবিদই এটা নাকচ করে দিয়েছেন।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় ইংরেজরা চলে যাবার সময় পূর্ব পাকিস্থানের (বাংলাদেশ) সরকারের কাছে কাছে হস্তান্তর করে যায় এই কুঠিবাড়ি সহ ভূ-সম্পত্তি। বর্তমানে নীলকুঠিটি সরকারী রেস্ট হাউজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
নীলকুঠির মুল ভবন ছাড়াও এখানে রয়েছে ঘোড়ার ঘর, কয়েদখানা, কাচারী ঘর, ও নায়েবদের আবাসন। নির্যাতনের ঘর আর নাচের ঘর মুল ভবনের সাথে সম্পৃক্ত। মূল ভবন ছাড়া বাকি ঘরগুলো সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের পথে। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ আর লুটপাটও করা হয়েছে গুপ্তধনের লোভে! বাইরে বিশাল আম ও লিচু বাগানের বড় বড় অনেক গাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১৯৭৮ সালে ১৩ মে তারিখে খুলনা বিভাগ উন্নয়ন বোর্ডের আমঝুপি অধিবেশনে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সংস্কার ও উন্নয়ন করা হয়। এরপর থেকে ব্যবস্থাপনার অভাবে জৌলুশ হারাচ্ছে আমঝুপি নীল কুঠিবাড়ি।









No comments:
Post a Comment