Tuesday, December 27, 2016

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজরিত আটচালা ঘর

"গাহি সাম্যের গান-
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।
নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,
সব দেশে সব কালে ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি..."
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থেকে যে পথটি কার্পাসডাঙ্গার ওপর দিয়ে মুজিবনগরের দিকে চলে গেছে, সেই পথে চন্দ্রবাঁশ এর কিছুটা আগে হাতে ডানে একটু ঢালূপথ পেরুলেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের
স্মৃতিবিজরিত আটচালা ঘর। খড়ের চাল দিয়ে তৈরি ঘরটি আজও দাঁড়িয়ে আছে একইভাবে।
নজরুল গবেষকদের মতে, ১৯২৬ ও ১৯২৭ সালে কবি এই কার্পাসডাঙ্গায় দীর্ঘসময় অবস্থান করেন। ওই সময়
কার্পাসডাঙ্গার ভৈরব নদীর তীরে বসেই সাহিত্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রচনা করেছেন । তিনি যে ঘরটিতে থাকতেন দেড়শ বছরের সেই পুরনো মাটির ও ছনের তৈরী আটচালা ঘরটি আজও নিজ অবয়বে কবির স্মৃতিতে অমলিন।
এখানে এসে কবি থেকেছেন, লিখেছেন অনেক কালজয়ী লেখা। এখানকার জীবনযাত্রা ও পরিবেশ তাকে সাহিত্যকর্ম 'মৃত্যুক্ষুধা', 'পদ্মগোখরো', 'ব্যাথার দান', 'লিচুচোর কবিতা'-সহ অসংখ্য গান লিখতে সহায়ক হয়েছিল।
১৯২৬ সালে বিপ্লবী হেমন্ত কুমার ও মহিম সরকারের আমন্ত্রণে কবি কাজী নজরুল ইসলাম কলকাতার আমহার্ষ্ট স্ট্রীট থেকে স্বপরিবারে এই কার্পাসডাঙ্গায় আসেন এবং দীর্ঘ সময় অবস্থান করেন। কার্পাসডাঙ্গায় অবস্থানকালীন সময়ে মহিম সরকারের কন্যা শ্রীমতি আভারাণী ও শিউলি রানী কবির কাছে গান শিখতেন। মূলত স্বদেশী আন্দোলনের নেতাদের উৎসাহ দিতেই পার্টির পক্ষে কবি কার্পাসডাঙ্গায় আসেন। এ ঘরেই অনেক গোপন বৈঠকও করেছেন কবি নেতাদের সাথে।
বাড়ির মালিক তৎকালীন নদীয়া কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হর্ষপ্রিয় বিশ্বাসের উত্তরসূরীরা নিজ অর্থায়নে নজরুলের স্মৃতি ঘেরা বাড়িটি অক্ষত রেখেছেন। বর্তমানে তার দুই নাতী প্রকৃতি বিশ্বাস (বকুল বিশ্বাস) ও প্রনতি বিশ্বাস (মধু বিশ্বাস) ওই বাড়িতে বসবাস করেন। যে ঘরে কবি থাকতেন সেই ঘরে স্বস্ত্রীক থাকেন বকুল বিশ্বাস। প্রায় প্রতি বছরই নতুন খড় দিয়ে চালা ঠিক করা হয়। কবির স্মৃতি অমলিন রাখতে এখনও ওখানে পাকা ঘর তোলা হয়নি। পাশেই নির্মান করা হয়েছে স্মৃতিফলক। তবে সরকারী কোন উদ্যোগ নেই।





মুল ঘর








                                             


No comments:

Post a Comment